আজকের বরাক, সিলেট, ১ জুন : ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা জলে হু হু করে বাড়ছে সিলেটের বিভিন্ন নদ-নদীর জল। ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে সিলেট সদর, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ উপজেলার অসংখ্য গ্রাম। এসব উপজেলার অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। জলবন্দি অবস্থায় আছেন প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ। শুক্রবার বিভিন্ন এলাকায় জল হালকা কমলেও অনেক নদীর জল এখনও প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে।
জানা গেছে, বিভিন্ন উপজেলায় এরই মধ্যে সড়কের ওপর জল চলে আসায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এমনকি সিলেট নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের নিচু এলাকায় বাসাবাড়িতে জল ঢুকে পড়েছে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি পরিবার পার্শ্ববর্তী আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলার আট উপজেলার ৪৮ টি ইউনিয়ন বর্তমানে বন্যাদুর্গত। বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৭৩৯ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান জানান, বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও সার্বিক পরিস্থিতির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। ৪৭০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনে আরও আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হবে। এছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে। অন্যদিকে, সিলেট নগরীর কুশীঘাট এলাকা, শাহজালাল উপশহর, তালতলা, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিরাবাজার এলাকায় বেশ কিছু বাড়িঘরে বন্যার জল ঢুকেছে। ইতোমধ্যে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মনিটরিং কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্গতদের মধ্যে বিতরণের জন্য সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কেনা হয়েছে শুকনো খাবার। জল উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কুশিয়ারা, সুরমা, সারি, গোয়াইন নদীর জল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত ও ঢল অব্যাহত থাকলে জল আরও বাড়তে পারে।
অপরদিকে, মৌলভীবাজার থেকে প্রতিনিধি জানান, জেলার সীমান্তঘেঁষা জুড়ি নদীর পানি বিপদসীমার ১৪৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া বৃষ্টি ও ঢলের কারণে মনু, ধলাই এবং কুশিয়ারা নদীতে জল বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে সদর উপজেলার হামরকোনা, দাউদপুর, ব্রাহ্মণ-গ্রাম ও মনুমুখ ইউনিয়নের বাহাদুর গ্রামের অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গতকাল জেলাপ্রশাসক, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী ও সদর উপজেলা ইউএনও দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
Author: Sam Paul
Journalist