ধলাই উপ নির্বাচন (প্রথম ভাগ) : গেরুয়া দলে টিকিটের প্রবল দাবিদার প্রাক্তন অধ্যাপক স্বপন শুক্লবৈদ্য
বিশেষ প্রতিবেদন, আজকের বরাক, শিলচর, ৭জুন: লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হলেন অসম বিধানসভার পাঁচ বিধায়ক। ফলে তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় উপ নির্বাচনের প্রয়োজন হবে। জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে দুজন বিজেপি, একজন কংগ্রেস, একজন অগপ ও একজন ইউপিপিএল দলের বিধায়ক ছিলেন। ধলাই (সংরক্ষিত) আসনের বিধায়ক তথা মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য শিলচর (সংরক্ষিত) থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। যারফলে, এই কেন্দ্রে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর এই উপ নির্বাচনে বিজেপি দলের প্রার্থী প্রত্যাশীদের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সংঘের প্রাক্তন কার্য্যকর্তা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দক্ষিণ পূর্ব প্রান্তের প্রাক্তন সম্পাদক তথা কাছাড় কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক স্বপন শুক্লবৈদ্য।
উল্লেখ্য, তিনি ১৯৯০ সালে কাবুগঞ্জ জনতা কলেজে ইকোনোমিক্স বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। তারপর ১৯৯৩ সালে যোরহাটে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘে মূখ্য শিক্ষক হিসেবে ছয় মাস কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৮ সালে সংঘের তৃতীয় বর্ষের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করেন। এরপর মণ্ডল বৌদ্ধিক প্রমুখ, শিলচর নগরের নগর কার্য্যবাহ, বিভাগ বৌদ্ধিক প্রমুখ, শিলচর বিভাগের বিভাগ সম্পর্ক প্রমুখ ইত্যাদি সংঘের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। তারপর ২০০০ সালে কাবুগঞ্জ জনতা কলেজ থেকে তাকে কাছাড় কলেজে বদলি করা হয়। তারপর থেকে তিনি বিভিন্ন সামাজিক, শিক্ষা ও ধর্মীয় কাজে জড়িয়ে পড়েন। ওই সময়ে তিনি আসাম কলেজ টিচার্স এসোসিয়েশনের সম্পাদক, কলেজ টিচার্স গভর্নিং বডির দায়িত্বও পালন করেন, তাছাড়া অখন্ড মণ্ডলেশ্বরের ধলাই আঞ্চলিক অখন্ড সংস্থার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০০১ সালে সংঘ অনুমোদিত শিক্ষা বিকাশ পরিষদ, দক্ষিণ পূর্ব প্রান্ত সম্পাদকের জন্য মনোনীত হন। এখানে বরাক উপত্যকার তিন জেলা সহ ডিমা হাসাও জেলা নিয়ে দক্ষিণ পূর্ব প্রান্ত বলা হয়েছে। এদিকে ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল অবধি সংঘের কেশব স্মারক সমিতির সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন স্বপন শুক্লবৈদ্য। ২০১৭ সালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দক্ষিণ পূর্ব প্রান্তের সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। এখানে মনিপুর রাজ্য, ত্রিপুরা রাজ্য, মিজোরাম রাজ্য এবং আসামের বরাক উপত্যকার তিন জেলা কাছাড়, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি এবং ডিমা হাসাও জেলা নিয়ে দক্ষিণ পূর্ব প্রান্ত বলা হয়েছে।
এদিকে, রাজনীতির মাধ্যমে জনসেবায় ব্রতী হওয়ার মনবাঞ্জা নিয়ে এবং শিলচর লোকসভা আসনে বিজেপি দলের টিকিট নিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের সবুজ সংকেত পেয়ে ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দক্ষিণ পূর্ব প্রান্ত সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। অন্যদিকে, ৩৪ বছর শিক্ষা জগতে অঙ্গাঅঙ্গী ভাবে জড়িয়ে থাকার পর অধ্যাপকের দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছা অবসরের জন্য আবেদন করেন। যা চলতি বছরের অর্থাৎ ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষ গ্রহন করেন, যার লেটার নম্বর হলো, ১/৪২২৪৭৬/২০২৪ । গত ৩১ জানুয়ারি থেকে এটা কার্য্যকর হয়েছে। এরপর কাছাড়ের বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে ধলাই বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল স্তরে জনসংযোগ করে ব্যাপক সাড়া পান। তখন এক কথোপকথনে তিনি জানিয়েছিলেন, দলীয় টিকিট পেলে জয়ী হবেন নিশ্চিত, তবে কোনো কারণবশত টিকিট বঞ্চিত হন, তখন দলীয় প্রার্থির হয়ে নির্বাচনের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। পরবর্তী সময়ে অসমের মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যকে লোকসভা নির্বাচনে দলীয় টিকিট প্রদান করায় স্বপন শুক্লবৈদ্য সরে দাঁড়ান, এবং দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারও করেন। এবারে ধলাই বিধানসভা কেন্দ্রে উপ নির্বাচনের প্রাক্তন অধ্যাপক স্বপন শুক্লবৈদ্যও যে একজন প্রবল দাবিদার, সেটা বলা বাহুল্য। গেরুয়া দলের হয়ে উপ নির্বাচনে আরও কয়েকজন টিকিট প্রত্যাশী রয়েছেন। প্রার্থীত্বের এই দৌড়ে কে কে রয়েছেন, সেগুলো পরবর্তী প্রতিবেদনে আসবে। ক্রমশ..
Author: Sam Paul
Journalist