আজকের বরাক প্রতিবেদক, কালাইন, ১আগস্ট: কালাইন উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মিড ডে মিলের বদলে খাওয়ানো হচ্ছে পাঁচ টাকা দামের কেক, চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে ক্লাস করানোর ফলে গরম ও ক্ষুধার জ্বালায় স্কুলের ভেতরেই দীর্ঘক্ষণ জ্ঞানহীন স্কুল ছাত্রী, অল্পের জন্য মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসলো ক্লাস সেভেনের স্কুল ছাত্রী। গ্রীষ্মের বন্ধ শেষ হওয়ার পর স্কুল খোলার প্রথম দিনই ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে কালাইন উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। জানা গেছে, স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য পুরাতন শ্রেণিকক্ষ গুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। আর ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস করানোর জন্য টিনের বেড়া দিয়ে অস্থায়ীভাবে তৈরি করা হয়েছে শ্রেণীকক্ষ। এসব শ্রেণিকক্ষ গুলোতে না আছে ফ্যান, না আছে জানালা। ছাত্র-ছাত্রীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল থেকে শুধুমাত্র ইংলিশ ও বাংলা এই দুটি ক্লাস হওয়া সত্ত্বেও বিনা কারণেই তাদের প্রচন্ড গরমের মধ্যে বিকেল তিনটা পর্যন্ত স্কুলে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়াও স্কুলে দীর্ঘক্ষণ থাকার পর প্রচন্ড ক্ষিধে থাকা সত্ত্বেও ছাত্র-ছাত্রীদের দুপুরের মিড ডে মিলের বদলে খাওয়ানো হয়েছে পাঁচ টাকা দামের একটি করে কেক।
একে তো প্রচন্ড গরম, তার ওপর ক্ষুধার জ্বালা, এসব সহ্য না করতে পেরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকা এই শ্রেণিকক্ষের ভিতরই অসুস্থ হয়ে পড়ে ক্লাস সেভেনের চৌদ্দ বছর বয়সী এক স্কুল ছাত্রী। প্রায় ঘন্টাখানেক অচেতন থাকার পরও স্কুলের তরফ থেকে ওই ছাত্রীটিকে নিকটবর্তী কালাইন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
পরে ওই স্কুল ছাত্রীর প্রতিবেশী দুটি মেয়ে স্কুল থেকে দৌড়ে এসে তার অভিভাবককে এই ঘটনার ব্যাপারে জানায়। খবর পেয়ে মেয়েটির বাবা তরুণ দাস, তড়িঘড়ি করে স্কুল থেকে মেয়েকে নিয়ে কালাইন হাসপাতালে পৌঁছান। মেয়েটির অবস্থা গুরুতর থাকায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর কালাইন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে শিলচর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু মেয়েটির পরিবারের আর্থিক অবস্থা নিতান্তই দুর্বল থাকায় তারা মেয়েকে নিয়ে শিলচর যেতে পারবেন না বলে কালাইন হাসপাতালের চিকিৎসককে জানান। অবশেষে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের অনেক প্রচেষ্টায় প্রায় এক ঘন্টা পর মেয়েটির জ্ঞান ফেরে। মেয়েটির বাবা তরুণ দাস সংবাদ মাধ্যমকে ক্ষোভের সুরে জানান, স্কুলের কর্তব্য ছিল যে কোন ছাত্র বা ছাত্রী অসুস্থ হলে তাকে তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, কিন্তু আজ তার মেয়ে স্কুলে দীর্ঘক্ষণ জ্ঞানহীন থাকার পরও তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। আজ যদি তার মেয়ের কোন কিছু হয়ে যেত, তাহলে সম্পূর্ণ দায়ী থাকত স্কুল কর্তৃপক্ষ।
Author: Sam Paul
Journalist